ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​লক্ষ্মীপুরে ৭০০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৩-১২-২০২৪ ০২:৪৭:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৩-১২-২০২৪ ০২:৪৭:৪২ অপরাহ্ন
​লক্ষ্মীপুরে ৭০০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন
বন্যা পরিস্থিতিতে এবার লক্ষ্মীপুরে সুপারির ফলন হয়েছে কম, তবে দাম অন্যবারের তুলনায় বেশি হওয়ায় বাগানীরা বেশ খুশি। অর্থকরী লাভজনক এ ফসল উৎপাদনে খরচ কম হওয়ায় সুপারি নিয়ে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে জেলাজুড়ে।
 প্রতি বছর সুপারির আবাদ বাড়ছে যেমনি তেমনি বাগানীদেরও উন্নত জাত নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে বেশ। এ জেলার উৎপাদিত সুপারি বেশী সুস্বাদু হওয়ায় লক্ষ্মীপুরবাসীর চাহিদা মিটিয়ে এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও বিক্রি হচ্ছে। কৃষি বিভাগ বলছেন, চলতি বছর সুপারির উৎপাদন ৭শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে তুলতে সার প্রয়োগ, পরিচর্চা আর উন্নত চারা লাগানোর পরামর্শ তাদের।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় সারিবদ্ধ সুপারি গাছে দৃষ্টি কাড়ে সবার। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি উৎপাদনে বেশ উপযোগী। উপকূলীয় এ জেলার ৫টি উপজেলার প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ও পতিত জমিতেই সারিবদ্ধ রয়েছে সুপারি বাগান। গাছে গাছে সুপারির ফলনে লাল সবুজে অবস্থা। বর্তমানে সুপারির শেষ সময়ে গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ, বিক্রি ও সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগানী, শ্রমিক, ক্রেতা-বিক্রেতারা। অর্থকরী এ ফসলকে ঘিরে এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে গত কয়েক বছর থেকে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর ৭ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে ৩৬ হাজার মে. টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য বর্তমানে ৭শ কোটি টাকারও বেশী বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
এদিকে সুপারি উৎপাদনে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই এ অঞ্চলের মানুষ নতুন নতুন সুপারি বাগান তৈরিতে ঝুঁকছেন। চারা রোপনের ৫-৬ বছরে ফলন আসে। সামন্য পরিচর্চায় বছরের পর বছর ফলন পেতে শুরু করেন বাগানীরা। বর্ষায় গাছ লাগানোর উত্তম সময়।
স্থানীয়রা জানায়, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার সুপারির হাটগুলো জমজমাট থাকে। চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বেপারিরা সুপারি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের হাটগুলো থেকে। জেলার সবচাইতে বড় বাজার মিলে দালাল বাজার, এছাড়া রায়পুরের খাসের হাট, সদরের রুসুলগঞ্জ বাজার, জকসিন, কমলনগর ও রামগতিতেও বেশ জমজমাট সুপারি বাজার। চাষীরাও দরকষাকষি করে সুপারি বিক্রি করছেন এসব হাটে। কেউ  বাজারে বিক্রি করে আবার কেউ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চলে বলে জানান। এতে করে সুপারিতে আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের। সুপারির মৌসুমে কেউ সুপারি বিজিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে পরে দাম বেশী হলে বিক্রি করেন। আবার কেউ পণ হিসেবে অথবা কাহন (১৬ পণ) হিসেবে বিক্রি করেন। বর্তমানে প্রতি পণ সুপারী বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। যা গত বছর ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।
এ বছর বন্যায় সুপারির আকার কিছুটা ছোট এবং ফলন কম হয়েছে বলে জানান বাগানীরা। তবে গেলো বছরের চেয়ে দাম বেশী পাওয়ায় স্থানীয়রা কিছুটা স্বস্থি প্রকাশ করেন। শ্রমিকরা জানায়, সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করা ও প্রক্রিয়াজাত সহ নানা কাজে ব্যস্ত তারা। ত প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকা আয় হয় বলে জানান তারা।
এদিকে লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মো. শামছুদ্দিন ফিরোজ জানান, বন্যা পরিস্থিতির কারণে এবার সুপারি উৎপাদন কম হয়েছে, তবে দাম বেশি হওয়ায় চাষীরা খুশি। চলতি বছর ৩৬ হাজার মেট্রিক টন সুপারির উৎপাদন হয়েছে, যার বাজার মুল্য ৭শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে তুলতে বাগানীরা তাদের বাগানে সার প্রয়োগ, পরিচর্চা আর উন্নত চারা লাগানোর পরামর্শ দেন এ কর্মমকর্তা।

বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে 
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ